মেহেরপুরে সরগরম নির্বাচনী মাঠ। বিএনপি ও জামায়াতের লড়াইয়ে চলছে ভোটারদের আকৃষ্ট করার প্রতিযোগিতা। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থীরা। আর জনসাধারণ বান্ধব ব্যক্তিকেই বেছে নেবেন বলে জানান ভোটাররা।জানা যায়, দিন যতই যাচ্ছে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থীরা। পাড়া-মহল্লা, শহর-গ্রাম, রাস্তা-ঘাটসহ সব স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে ভোটের হাওয়া। আর সাধারণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছেন প্রার্থীরা।ভোটারদের কাছে এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তারা। মেহেরপুর-১ আসনে এখন পর্যন্ত ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। বিএনপি জামায়াতের পাশাপাশি এরমধ্যে রয়েছে জাতীয় পার্টি, এনসিপি, সিপিবি, স্বতন্ত্রসহ বিএনপির তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে মূল লড়াইটি হবে ধানের শীষ এবং দাঁড়িপাল্লার মধ্যে এমনটাই ধারণা করছে অনেকে।আসনটিতে ধানের শীষের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ অরুন বলেন, সাধারণ মানুষ ভোটাধিকারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে মুখিয়ে রয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে ধানের শীষ প্রতীক নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে। তবে নির্বাচনী আবহাওয়া ঘোলাটে করতে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেন এ নেতা।আরও পড়ুন: ২৩টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন করেও কখনও হারেননি বেগম জিয়াএ দিকে জেলা জামায়াতের আমির ও জামায়াত মনোনীত প্রার্থী তাজউদ্দিন খান বলেন, দলের প্রতিটি কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিটি ভোটারের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে এবং অসৎ, চাঁদাবাজদের ভোটাররা প্রত্যাখ্যান করবেন বলেও আশাবাদী এই প্রার্থী।এ ছাড়াও ভোটারদের আকৃষ্ট করতে জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ, কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের মিজানুর রহমান রয়েছেন ভোটের মাঠে সরব। মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন এনসিপি কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্বাহী সদস্য সোহেল রানা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান।তবে বিএনপি থেকে সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুমানা আহমেদ মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এতে বিএনপির অন্তঃকোন্দলের বিষয়টি ভোটের মাঠে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে ভোটযুদ্ধে স্বামী-স্ত্রী: আলোচনায় জিলানী ও রওশন আরাভোট নিয়ে আশাবাদী সাধারণ ভোটাররানারী-পুরুষের পাশাপাশি কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ ও তরুণদের চাওয়া সৎ যোগ্য ও ভালো মানুষের নেতৃত্ব। এলাকার উন্নয়নে যারা বেশি কাজ করবেন তাদেরকেই বেছে নেবেন বলে জানাচ্ছেন ভোটাররা।নারীদের অধিকার বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অভাব চলাচলে সুরক্ষা প্রদান করতে যে প্রার্থী বেশি যোগ্য হবেন বলে মনে করছেন তাদেরকেই ভোট দেবেন বলে জানান নারী ভোটাররা।আর পুরুষ ভোটাররা জানান, এলাকার উন্নয়ন এবং আর্থ সামাজিক কার্যক্রমে যারা বেশি সম্পৃক্ত হতে পারবেন তাদেরকেই বেছে নেবেন।তরুণ ভোটাররা জানান, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ তারুণ্যের শক্তিকে উজ্জীবিত রাখতেই এবারের নির্বাচনে ভোট দেবেন তারা।আরও পড়ুন: সবচেয়ে বড় আসনে দুর্ভোগের শেষ নেই বাসিন্দাদের, নানা পরিকল্পনা প্রার্থীদেরএ দিকে নির্বাচনী সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কাজ চলমান থাকবে বলে জানান নির্বাচন অফিসার।জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর নিয়ে গঠিত মেহেরপুর এক আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৮২ হাজার ৬৫৫ জন। যেখানে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৯০ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৫৯ হাজার ৮২ জন। এই আসনটিতে তিনজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।আগামী সংসদ সদস্য নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে ১২৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন অফিস।