যশোরে ছয়টি আসনে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রার্থীরা। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা রিটার্নিং কার্যালয়ে আসেন। পরে দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে নিজ নিজ আসনের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বিকেলে জেলা রিটার্নিং কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন বিএনপি থেকে জেলার হেভিওয়েট প্রার্থী দলটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এছাড়া জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাগপাসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে জেলা রিটার্নিং কার্যালয় প্রাঙ্গণ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর ছিল। ৬টি আসনে ৪৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করে সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান প্রার্থীরা। যশোর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৬টি সংসদীয় আসনে ৪৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে বিএনপি থেকে ১০ জন, জামায়াত থেকে ৬ জন, স্বতন্ত্র ১০ জন, ইসলামী আন্দোলনের ৬ জন, জাতীয় পার্টি ৬ জন, বিএনএফ, বাসদ, জাগপা, সিপিবি, খেলাফত মজলিস ও মাইনরিটি জনতা পার্টি থেকে একজন করে এবং এবি পার্টির ২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর আগে ৬টি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ৭১ জন প্রার্থী। যশোর-১ (শার্শা): আসনে ৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন- বিএনপির নুরুজ্জামান লিটন ও মফিকুল হাসান তৃপ্তি, জামায়াতে ইসলামীর মুহাম্মদ আজিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির জাহাঙ্গীর আলম চঞ্চল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বখতিয়ার রহমান, স্বতন্ত্র শাহজাহান আলী গোলদার ও স্বতন্ত্র আবুল হাসান জহির। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা): আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন— বিএনপির সাবিরা সুলতানা ও মোহাম্মদ ইসহাক, জামায়াতে ইসলামী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন ফরিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইদ্রিস আলী, জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের শামসুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর ইমরান খান, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) রিপন মাহমুদ এবং স্বতন্ত্র মেহেদী হাসান ও জহুরুল ইসলাম। যশোর-৩ (সদর): আসনে ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন— বিএনপির অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জামায়াতে ইসলামী আব্দুল কাদের, জাতীয় পার্টির খবির গাজী, সিপিবি-এর রাশেদ খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুহাম্মদ শোয়াইব হোসেন ও জাগপার নিজামউদ্দিন অমিত। যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর): আসনে ১০ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন- বিএনপির অ্যাডভোকেট সৈয়দ এ এইচ সাবেরুল হক সাবু, টি এস আইয়ুব ও মতিয়ার রহমান ফরাজী, জামায়াতে ইসলামী গোলাম রসুল, জাতীয় পার্টি জহুরুল হক, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি সুকৃতি কুমার মন্ডল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বায়েজিদ হোসেন, খেলাফত মজলিস আশেক এলাহী, স্বতন্ত্র এম নাজিম উদ্দিন আল আজাদ ও ফারহান সাজিদ। যশোর-৫ (মণিরামপুর): আসনে ৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন— বিএনপি রশিদ আহমদ, জামায়াতে ইসলামী গাজী এনামুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টি এম এ হালিম, স্বতন্ত্র কামরুজ্জামান, শহীদ ইকবাল হোসেন, এ বি এম গোলাম মোস্তফা ও নজরুল ইসলাম। যশোর-৬ (কেশবপুর): আসনে ৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন— বিএনপি আবুল হোসেন আজাদ, জামায়াতে ইসলামীর মোক্তার আলী, জাতীয় পার্টির জি এম হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শহীদুল ইসলাম ও এবি পার্টির মাহমুদ হাসান। মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘যশোর-৩ আসন নির্বাচনি এলাকা থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জুলাই যোদ্ধা, ওলামা, মাশায়েখ, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। আমরা ইতিবাচকভাবে সামনে এগোতে চাই। আমি আশাবাদী বর্তমান নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকার লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করবে। সকল প্রার্থীর জন্য নির্বাচনের মাঠে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।’ মিলন রহমান যশোর/এমএন/এএসএম