শীতের সকালে বাইরে বের হওয়ার আগে যা জানা জরুরি

শীতকাল মানেই কুয়াশা, ঠান্ডা হাওয়া আর সকালের আলসেমি। অনেকেই এই সময় ভোরে বেরিয়ে পড়েন হাঁটা, অফিস বা জরুরি কাজে। কিন্তু শীতের সকালে বাইরে বের হওয়া যতটা স্বাভাবিক মনে হয়, ততটাই ক্ষতিকর। তাই কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। সামান্য অসতর্কতা থেকেই বাড়তে পারে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট কিংবা আরও জটিল শারীরিক সমস্যা। তাই শীতের সকালে ঘর ছাড়ার আগে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় জানা এবং মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতের সকালে কেন বাড়তি সতর্কতা দরকার শীতকালে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ায় শরীরের রক্তনালী সংকুচিত হয়। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, হৃদ্‌রোগী, উচ্চ রক্তচাপ বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি। পাশাপাশি কুয়াশার কারণে বাতাসে দূষণের মাত্রাও অনেক সময় বেড়ে যায়, যা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর। পোশাক নির্বাচন হোক পরিকল্পিত শীতের সকালে বাইরে বেরোনোর সময় পোশাক নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হালকা ঠান্ডা মনে হলেও শরীর পুরোপুরি ঢেকে রাখাই ভালো। গলা, বুক ও কান ঢাকার ব্যবস্থা রাখুন। কারণ শরীরের এই অংশগুলো দিয়ে ঠান্ডা সহজে ঢুকে পড়ে। একাধিক পাতলা কাপড় পরলে প্রয়োজন অনুযায়ী খুলে বা পরা যায়, যা শরীরের জন্য আরামদায়ক। খালি পেটে বের হওয়া ঠিক নয় অনেকে সকালে কিছু না খেয়েই হাঁটতে বা কাজে বেরিয়ে পড়েন। শীতকালে এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। খালি পেটে বের হলে শরীর দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায় এবং দুর্বল লাগতে পারে। তাই হালকা কিছু খেয়ে বের হওয়াই ভালো। এক কাপ কুসুম গরম পানি, চা বা হালকা নাশতা শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে। হঠাৎ ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন ঘর থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা হাওয়ার সংস্পর্শে এলে অনেকের সর্দি, কাশি বা মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। সম্ভব হলে দরজা-জানালার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে শরীরকে বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ভালো। এতে শরীর ধাক্কা খায় না। আরও পড়ুন:  শীতে ফিট থাকতে বাইরে নয়, ভরসা রাখুন ঘরোয়া শরীরচর্চায় শীতের আরাম মোজা, সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলে শীতের সকালে দৌড়ানো, উপকার নাকি ক্ষতি? শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা থাকলে বাড়তি সতর্কতা শীতের কুয়াশামাখা সকালে বাতাসে ধুলো ও দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে। প্রয়োজন হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। ইনহেলার বা প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখাও জরুরি। ভোরের হাঁটা কি সবার জন্য নিরাপদ? শীতকালে খুব ভোরে হাঁটতে বেরোনো সবার জন্য উপযোগী নয়। কুয়াশা, ঠান্ডা হাওয়া ও কম তাপমাত্রার কারণে অনেক সময় উপকারের বদলে ক্ষতিই হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত ভোরের হাঁটা শুরু করা ঠিক নয়। প্রয়োজনে সূর্য ওঠার পর বা ঘরে বসেই হালকা শরীরচর্চা করা যেতে পারে। শরীর গরম রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন বাইরে যাওয়ার আগে হালকা স্ট্রেচিং বা কিছু নড়াচড়া করলে শরীর উষ্ণ থাকে। এতে পেশি শক্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। শীতে শরীরকে একেবারে স্থির না রেখে সক্রিয় রাখা খুবই জরুরি। শীতের সকাল উপভোগ্য হলেও এই সময় বাইরে বেরোনোর আগে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সঠিক পোশাক, খাবার, সময় নির্বাচন এবং নিজের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখলেই অনেক ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। মনে রাখতে হবে, সুস্থ থাকার জন্য শুধু অভ্যাস নয়, প্রয়োজন সচেতন সিদ্ধান্তও। শীতের সকালে একটু বাড়তি সতর্কতাই আপনাকে রাখতে পারে নিরাপদ ও সুস্থ। তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন জেএস/